জগৎ ভিজে। খালি পায়ে বাইরে গিয়ে দাঁড়ালে হাওয়া-মাটি থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয় শরীর। ঢ্যাঙা গাছগুলোর মেঘ ছেঁচা জল-প্রসাদের ছিটে ফোঁটা হয়ে ঝরে।

“ঠাণ্ডাটা লাগাবি। লাগিয়েই ছাড়বি।”
“মুগ ডালের খিচুরি তে পেঁয়াজ ফোড়ন দিতে নেই।”

নিষাদ, গান্ধার কোমল। বড্ড বেশি কোমল। মন খারাপের শুদ্ধতায় বিষাদের খাদ।

মল্লারের ভরি হয় না। রতি।

তারপর মিইয়ে যাওয়া ডালপাতা পেরিয়ে কাদার ছিটে পায়ে মেখে হাওয়াই চটির শ্যাওলা আলাপ। এবং খুব প্রত্যাশিত আছাড়। মীড়। কাপড়ে লেগে থাকা পৃথিবী সরানোর তোয়াক্কা নেই। কংক্রীটের আল বেয়ে চুপসানো ফুটবলটার সাথে দ্রুত তান। ছড়ে যাওয়া কনুই তে মাকড়সার জালের মতন মিহি কুয়াশা ডলে নিলে আরাম হয়।
কোনও ব্যস্ততা নেই। তাড়া নেই কোথাও পৌঁছনোর। গৎ নেই, তালের শেকল নেই। আনমনা গুনগুন। বিজ্ঞের মাথা নাড়া। তরফদারিরা হাসে। হাওয়া দেয় আজও, শুধু পাতা ওড়ে না, লেপ্টে থাকে কাপড়ে, চাদর হয়ে থাকে মরা পৃথিবীটার বুকে।
রঙ নিভে আসতে থাকে। তাই বলে যে সাদা কালোয় পর্যবসিত হয় তা নয়। কিন্তু গভীর হয়। গাঢ় হয়। ঘন সবুজকে কালচে বলে ভুল হয়। “শুধু পা টুকু ঠেকাবো, চান করব না” কে “দেখাচ্ছি মজা” করে যে বালখিল্য ঢেউটা ঝুপ্পুস ভিজিয়ে দেয়, সেইরকম করে তৃতীয় দফার বৃষ্টি নামল।

আর তারপরে নিমরাজী ঘরে ফেরা। সোঁদা গামছা। বাইরে কিছুই সরগরম নয়। রেডিওতে নিম্নচাপের সতর্কবার্তা।

জগৎ ভিজে। চোখ। ভিজে।