এর মধ্যে দু’বার বাজার আর দু’তিনবার টুকটাক অজমায়েৎ বেরিয়েছি। সাধারণতঃ দিনগুলো আজকের মতোই যায়, একটাও জীবন্ত মানুষের মুখ দেখা হয় না। (ভাগ্যিস মৃত মানুষের মুখও দেখতে হয় না।) রিসার্চের কাজকর্ম চলছে। চারটে বই বাকি ছিল পড়া। খতম। আমাদের অ্যালবামের কাজ চলছে, একটা বেঁটে চলচ্চিত্রে আবহ দেবার কাজ ও চলছে। তাই বেঁচে আছি, পাগল না হয়ে। শুধু বার, ঘন্টার হিসেব গুলিয়ে গেছে পুরোপুরি। ক্যালেন্ডার না দেখে আজ কোন বার কিছুতেই বের করতে পারিনি। রাত ন’টা থেকে রাত দু’টো ঘুমিয়েছি। কোনওদিন চারটে থেকে সকাল ন’টা। খিদে কমে গেছে।

দেখলাম পাখিদেরও গুলিয়ে গেছে সময়। অনেক রাত জেগেছি, বাপের জন্মে দেখিনি পাখিরা রাত দু’টো থেকে হল্লা করছে। প্রতিরাত! আমাদের এখানে শীত বসন্তের ফারাকটা সুন্দর বোঝা যায়। গাছে পাতা, ফুল হুহু করে বাড়ে, ফলত যে কোনও অনুভূমিক পিঠ হলুদ হয়ে যায় রেণুতে! এরা বলে পোলেন পলিউশন। ফুলের রেণুরও নাকি দূষণ! অবশ্য এদের বাস্তবিক অ্যালার্জি আছে। যাইহোক, শীতকালে পাখিরা আরও দক্ষিণে পালায়, বসন্তের শুরুতে ফিরে আসে। এসেছে। কার্ডিনাল, ডাভ, ব্লু জে, আরও কতো পাখির নাম জানিনা। এমনিতেই একটা অভয়ারণ্য মার্কা ব্যাপার হয়। এখন তো কথাই নেই। রাস্তায় এমনি গাড়ির চেয়ে পুলিশের গাড়ি বেশি। গাড়ি কি ডিম দেয় না বাচ্চা পাড়ে? যাক্‌গে, বছর পাঁচেক হল এই গঞ্জে, সাড়ে চারটের আগে পাখিদের জেগে উঠে হল্লা করতে দেখিনি। এখন দেখছি। মেঘগুলো নীচে নেমে এসে কুয়াশার সঙ্গে ভাতেভাত মেখে গেছে, আলাদা করা যাচ্ছে না।