একটা লোক দাস কেবিনে বসে কাটলেট খাচ্চে। কাটলেটের গায়ে যেন বড় বড় ছাপার অক্ষরে বাসি লেখা রয়েচে। তা কাসুন্দি মাখিয়ে কাটলেট সাবড়াবার পর সে বিল মিটিয়ে বেরিয়েই দেখে, ওমা, ফুটপাতে হকার কোথায়? এ তো মরূভূমি! দিব্যি কাঁটাগাছ। চড়চড়ে রোদ। ঘাম। চোঁয়া ঢেঁকুর। ভগবান বা দোকানদার কেউ একটা বড়ি এগিয়ে দিল। সেটা মুখে পুরতেই স্বর্গদ্যান। পারিজাত, অপ্সরা, নটরাজ। ঢেউ খেলানো বাতাস। টিভিতে এ’রকম গুচ্ছের হজমের বড়ির বিজ্ঞাপন দিত। তারপর দেখাত একটা গোলাপী রঙের তরল সে লোকটার কণ্ঠনালী বেয়ে পাকস্থলীর দিকে গুটিগটি এগিয়ে যাচ্ছে। পৌঁছলেই এন্ডোথার্মিক বিক্রিয়া। এগুলো ছোটবেলায় দাগ কাটত না। জেলুসিল আর স্যারিডনের তফাৎ বুঝতাম না। অ্যান্টাসিড শব্দটা তখন বড়দের খুব প্রিয় ছিল। গোলাপি জেলুসিল দেখলে ওয়াক আসত। বাবা বিয়েবাড়ি ফেরতা অ্যাকোয়া টাইকোটিস গেলাত। ওটা আমার চাইল্ডহুড ট্রমা। এত নিষ্ঠুর কেউ হয়? হাত অবধি সাবান দিয়ে ধুইনি খাসীর গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে ঘুমোব বলে, এদিকে জোয়ানের আরক? সেই থেকে জোয়ানের উপর বিতৃষ্ণা এসে গেছে। সে’সব সময় পেট ছাড়ত মাঝেমধ্যে, কিন্তু অম্বল ছিল একটা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এ ট্যাগ লাগানো জিনিস। পুদিনহরা দেখলে পুচুৎ করে পেট টিপে সবুজ রক্ত বের করে ফেলতাম। একশোটা বাবল র‍্যাপের শক্তি আছে এক দানা পুদিনহরায়। বিশ্বাস না হয় ফাটিয়ে দেখুন!

সেই বিজ্ঞাপনগুলো মনে পড়ছে। হাফপ্যান্টের ইলাস্টিকের মত করে ঠাণ্ডা লুচি ছিঁড়েছি বেশ কিছু। টেনিদার মত করে বাসি বেগুনি সাবড়েছি। ভিতরটা মরূভূমি হয়ে আছে। গলার কাছটা বাবলাগাছ। চোখ বন্ধ করলেই স্বপ্ন দেখছি। একটা কাঁচের গেলাসে খানিকটা জল। তাতে একটা সাদা বড়ি পড়ল। বুড়বুড়ি কাটা শুরু হল নিমেষে। গোঁৎ করে এক ঢোঁকে বাবলার জঙ্গল সাফ হয়ে যেন গলার ভিতরে কেউ যেন পাউডার লাগিয়ে দিল। আহা। চোখ খুলে বাসন্তী পোলাউ এর দিকে তাকালে কান্না আসছে।