” উ সব হামকো কেয়া পাতা? হাম তো উ যো রেলগেট হ্যায় না? উসিকে বগল মে একঠো …”

আষাঢ়ের দ্বিতীয় দিনে যক্ষের চোখ খুলল একটা নীল সাদা ট্যাক্সির পিছনের আসনে। হিসেব অনুযায়ী আঁধারে আর সব মিশে যাওয়ার কথা। বাস্তবে হলুদ ট্যাক্সি, নীল হলুদ বাস, সবুজ হলুদ অটোরূপী ওরাংওটাং, সাধনা ঔষধালয়ের গোটা বাড়িটা এবং সকল বিশ্বচরাচর আউট অফ ফোকাস। কেন্দ্রবিন্দুতে জানালার কাঁচে বৃষ্টিছাঁটের নক্সা। দিব্যি কম্পোজিশন, ক্যামেরা থাকলে…

যক্ষিণীর চোখ খোলেনি। যক্ষের কাঁধে মাথা মেলে দিয়েছে ঘনঘুমের মোহে। তার কেশলিপ্ত কপালে চুমু খাওয়ার ধান্ধা করে যক্ষ, কিন্তু রিয়ারভিউ মিরর একটি ভয়ানক আবিষ্কার। আর তাছাড়া লিপ্ত মানে মোটেই লেপ্টে থাকা নয়। সিগনাল ছাড়ে। মোড় ঘুরতে গিয়ে বেসামাল সাইকেল আরোহীর সামনে পড়ে যক্ষবাহন। তড়িঘড়ি ব্রেক কষতে হয়। ইঞ্জিন থেমে যায় ঝাঁকুনি দিয়ে। যক্ষিণী চোখ খুলে বলে, “তবে? দোষ কেবল আমার বেলা? ক্লাচ ছাড়তে কেবল আমারই সমস্যা?” যক্ষসারথী ওয়াইপার চালিয়ে দেয়।

বৃষ্টি থামলে কলকাতার যমজ মাথা তোলে, রাস্তাজমাজলে, প্রতিবিম্ব হয়ে। দুই শহরের দিগন্তে কেলেঙ্কারি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে দুই মূর্তি। ছপাস ছপাস শব্দে সময় হেঁটে যায়। কাদার ছিটে সঙ্গে করে বাড়ি ফেরে যক্ষিণী, তাঁকে পৌঁছে ফেরার পথে বাসস্ট্যাণ্ডে কাঁধে টোকা পড়ে। ঝুঁকে পড়ে একগাল হাসে মেঘদূত। “ইয়ে, হেহে, আমার পারিশ্রমিকটা?” সেরকম কোনও সমঝোতা হয়েছিল বলে মনে পড়েনা যক্ষর। আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করে, “রেট কত যাচ্ছে?” মেঘদূত বিগলিত হয়ে পড়ে। “ওই ধরুন এক মহাকাব্য?” যক্ষ চটে যায়। “অকম্মার ধাড়ি। পইপই করে বলেছিলাম দুপুরবেলা নাগাদ আসতে, একটু শীতল হত, এখন এসে মহাকাব্য চাইছে! তিন প্যারার বেশি এক শব্দ ও পাবে না! যাও! “