হ্যাঁ দাদা জানেন। এইরকম মনে হত জানেন? মানে হয় এখনও। এখনও মনে হয়। ফুরোবেই না। ফুরোতে পারেই না। অথচ কী সাধ, ফুরোবে। দাদা কী রেকর্ড করছেন নাকি কথা? তা করুন তা করুন। আসলে দুটি কথা বলার তো লোক পাইনা। আর কেউ কেনই বা সময় অপচয় করে শুনবে বলুন আমার কথা, কিন্তু কথা যে পায়। বলতে সাধ জাগে। মনে হয় বলতে বলতে যদি সত্যি হয়ে যায়। মানে, বুঝছেন তো? বড় আশা, একদিন ফুরোবে। সময় একদিন ফুরোবে, অপেক্ষা? এই যে অপেক্ষাটা, এটাও। ফুরোবে। এরকম আশা হয়। আবার বড় ভয় হয়, জানেন দাদা, আশা করতে বড় ভয় হয়। মধ্যবিত্ত তো, পাওয়ারও সাধ আবার সাধেরও ভয়, হেহে, কী বুঝলেন? এই ধরুন ভেবে বসে রইলেন, কী? রইলেন বসে, তারপর হল না। হলই না। তখন বুক টুক ফেটে এক্কেরে চৌচির? কী? আশা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ না? কিন্তু ঠকাবেন দাদা কাকে? এদিকে বলে যাচ্ছেন আশা করব না শালা যা হয় হবে, মন শালা বিভীষণ, ঠিক লুকিয়ে চুরিয়ে একটু আশা করবে, ঠিক? মদের নেশার চেয়েও কঠিন নেশা। সুখের নেশা। কোনদিন হঠাৎ দেখলেন বুক ভারী হয়ে আছে, জমাট অভিমানের মত, কাউকে শালা বলতেও পারছেন না, আর নখের ডগা টনটন করছে। ডাক্তার কিন্তু নার্ভের অসুখ বলে খালাস। এদিকে কী মুশকিল বলুন, আশা ছাড়া একটা মানুষ বাঁচে কী করে? আপনি বলবেন বাঁচার দরকার টাই বা কী? তা ঠিক। কী হবে বেঁচে। হ্যাঁ? কী বললেন? হ্যাঁ। অপেক্ষা। সারা জীবনটাই। ওটাই রুটিন। ভগবান খুড়োর কল। ওটেই অভ্যেস হয়ে গেছে। মেনে নিইচি। শেষ আর হবে না। ফুরোবে আর না। তার দেখাও মিলবে না। বুঝলেন? মিথ, মিথ। ভূত বলে যেমন কিছু হয়না, শেষ বলেও কিছু নেই। কিন্তু অপেক্ষাটা আছে। মানে বুঝছেন? শেষ যে নেই, সেটা ধরে নিয়ে যে বসে থাকব, তার যো নেই। অপেক্ষার সুড়সুড়িটা আছেই। এরপর হবে, হ্যাঁ, এরপর, এইত্তো, আর ক’টা দিন। ভাগ শালা। সেইদিন কোনওদিন আসে না। কিন্তু যদি আসে? ক’টা বাজে দাদা? হ্যাঁ, সোয়া ছ’টারটায় একটু ভীড়টা কম হয়। আসবে আসবে। ট্রামটা আসবে। আপনি কি উত্তরে যাচ্ছেন?
অফুরান
